হ্যাবারমাস বলেছেন, আজকের পৃথিবীতে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলি এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের একে অপরের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। মহম্মদ সেলিম উবাচ, শ্রীরামকৃষ্ণের 'যত মত তত পথ' উক্তির মধ্যেই~~~ুরাইয়ে ২ এপ্রিল থেকে ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিপিআই(এম) দলের ২৪তম পার্টি কংগ্রেস। তার রাজনৈতিক খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই দলিলটির 'হিন্দুত্বের মোকাবিলা' শীর্ষক অধ্যায়ের একটি অনুচ্ছেদ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল বাম তাত্ত্বিকদের মধ্যে। সেটি কংগ্রেসে গৃহীতও হয়েছে। কী আছে এই দলিলে? অনেকেই এমনটা বলেছে যে, পার্টি কংগ্রেসে ধর্ম সম্পর্কে তাদের চিরাচরিত অবস্থানটি পালটে নিয়েছে সিপিআই(এম)। বিগত এক দশক ধরে বিজেপি জমানায় উগ্র হিন্দুত্বের মতাদর্শটি দেশের এক বিপুল অংশের মানুষকে প্রভাবিত করেছে। এই প্রভাবকে প্রতিহত করতে আরএসএস-বিজেপি-র বিরুদ্ধে রাজনৈতিক, মতাদর্শগত, সাংস্কৃতিক ও সাংগঠনিক ভাবে রুখে দাঁড়ানোর কৌশল ও কর্মসূচিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিল এ বারের পার্টি কংগ্রেসে পেশ হওয়া সিপিআই(এম)-এর খসড়া রাজনৈতিক প্রতিবেদন। এতে 'হিন্দুত্বের মোকাবিলা' শীর্ষক অধ্যায়ের ২.৮০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: 'ধর্মে বিশ্বাসী মানুষের মধ্যে গিয়ে দলকে কাজ করতে হবে। ধর্মীয় বিশ্বাস এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার যে এক জিনিস নয়, সেই তফাত তাদের কাছে ব্যাখ্যা করতে হবে। উৎসব ও সামাজিক জমায়েতে বেশি করে অন্তর্ভুক্ত হতে হবে, যাতে সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যে সে সবের ব্যবহার না হয়'। অনেকেই মনে করছে, এই অনুচ্ছেদটি অবিকৃত রূপে পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত হওয়ার ফলে ঈশ্বরে বিশ্বাস এবং ধর্ম সম্পর্কে সিপিআই(এম)-এর চিরাচরিত অবস্থানটির অনেকখানি বদল ঘটবে। সিপিআই(এম)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য অবশ্য বলেছিলেন যে, বিষয়টিকে অতখানি গুরুত্ব দিয়ে দেখার কিছু নেই। বলেছেন, 'ধর্ম ও উৎসব নিয়ে অনেক বিভ্রান্তিমূলক ধারণা চালু আছে। খুব অভিনব কিছু এখানে বলা হচ্ছে না, অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করা হচ্ছে।'এক দিক থেকে দেখলে কথাটি মিথ্যে নয়। দীর্ঘ দিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র দুর্গাপুজোর সময়ে মার্কসবাদী সাহিত্যের স্টল করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ব্যবহার করে জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করে আসছে সিপিআই(এম)। দলীয় সদস্য ব্যতীত~~~িলা' শীর্ষক অধ্যায়ের ২.৮০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: 'ধর্মে বিশ্বাসী মানুষের মধ্যে গিয়ে দলকে কাজ করতে হবে। ধর্মীয় বিশ্বাস এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার যে এক জিনিস নয়, সেই তফাত তাদের কাছে ব্যাখ্যা করতে হবে। উৎসব ও সামাজিক জমায়েতে বেশি করে অন্তর্ভুক্ত হতে হবে, যাতে সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যে সে সবের ব্যবহার না হয়'। অনেকেই মনে করছে, এই অনুচ্ছেদটি অবিকৃত রূপে পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত হওয়ার ফলে ঈশ্বরে বিশ্বাস এবং ধর্ম সম্পর্কে সিপিআই(এম)-এর চিরাচরিত অবস্থানটির অনেকখানি বদল ঘটবে। সিপিআই(এম)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য অবশ্য বলেছিলেন যে, বিষয়টিকে অতখানি গুরুত্ব দিয়ে দেখার কিছু নেই। বলেছেন, 'ধর্ম ও উৎসব নিয়ে অনেক বিভ্রান্তিমূলক ধারণা চালু আছে। খুব অভিনব কিছু এখানে বলা হচ্ছে না, অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করা হচ্ছে।'এক দিক থেকে দেখলে কথাটি মিথ্যে নয়। দীর্ঘ দিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র দুর্গাপুজোর সময়ে মার্কসবাদী সাহিত্যের স্টল করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ব্যবহার করে জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করে আসছে সিপিআই(এম)। দলীয় সদস্য ব্যতীত ব্যক্তি নাগরিকের ধর্মাচরণে কখনওই বাধা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেনি এই দল। দলের দু'এক জন নেতা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে অংশগ্রহণও করেছেন। দীর্ঘদিন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা হরকিষণ সিং সুরজিৎ আজীবন মাথায় পরিধান করেছেন পাগড়ি। বছর খানেক আগেই জ্যোতি বসুর জন্মদিন পালনের সভায় মহম্মদ সেলিম জানিয়েছিলেন যে, পুজো না করলেও জ্যোতি বসু প্রসাদ খেতেন। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে হুগলি জেলায় অনুষ্ঠিত সিপিআই(এম)-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলনে মার্কস-লেনিনের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল শ্রীরামকৃষ্ণর ছবিও। সিপিআই(এম)-এর সম্মেলনে রামকৃষ্ণের ছবি কেন, এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছিলেন যে, 'যত মত তত পথ,' গণতন্ত্রের এর থেকে ভালো ব্যাখ্যা আর হতে পারে না। কাজেই ধর্মকে যে সিপিআই(এম) অচ্ছুত করে রেখেছে, এমন নয়। তবুও মানতেই হয়, ধর্মে বিশ্বাসী মানুষদের মধ্যে গিয়ে কর্মীদের কাজ করার এত স্পষ্ট আহ্বান আগে কখনও শোনা যায়নি। ধর্ম সম্পর্কে সিপিআই(এম) নেতাদের নানা সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং উল্লিখিত দলিলটি থেকে মনে হচ্ছে, বুঝে বা না বুঝে, দলটি ধর্ম সম্পর্কে কট্টর মার্কসবাদী অবস্থান থেকে খানিক সরে এসে য়ুরগেন হ্যাবারমাস-এর উত্তর-ধর্মনিরপেক্ষতার সন্দর্ভটিকেই গ্রহণ করছে। তাঁর তাত্ত্বিক জীবনের প্রথম দিকে জনপরিসরে ধর্মকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে হ্যাবারমাস মনে করতেন না। কিন্তু, ৯/১১-র ঘটনার পর থেকে ধর্ম এবং ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে হ্যাবারমাস-এর অবস্থান পাল্টাতে থাকে। ২০০৮ সালের ১৬